Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

এক নজরে

ভূমিহীন ঝুমিয়া পরিবারের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, ঝুম চাষ নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্থানীয় জনগণের দারিদ্র বিমোচন, ভূমির ক্ষয়রোধ, নাব্যতা বৃদ্ধি, ভূমির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং বনজ সম্পদের উন্নতির লক্ষ্যে ১৯৬০-৬১ সনে সরকারি বিজ্ঞপ্তি নং- XII 101761/2030/28/28/March, 1961 মূলে ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের সৃষ্টি হয়। ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগ সৃষ্টির পূর্বে বিভিন্ন অশ্রেণীভূক্ত বনাঞ্চলে মৌজার (বর্তমানে সংরক্ষিত এবং ৪ ও ৬ ধারায় বিজ্ঞপ্তিত) নিয়ন্ত্রণ ছিল ডেপুটি কমিশনারের আওতায় এবং এ সমস্ত অঞ্চলের বন রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের উপর।

ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের বনভূমি রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাইনী, রাইংখিয়ং ও খাসখালী ব্লকে অবস্থিত। মাইনী ব্লকটি মাইনী ও কাচালং নদীর সংযোগ স্থল হতে ১২ কিঃমি উপরে মাইনী উপত্যকায় অবস্থিত। রাইংখিয়ং ব্লকটি রাইংখিয়ং ও কর্ণফুলী নদীর সংযোগ স্থল হতে ১৫ কিঃ মিঃ উপরে রাইংখিয়ং উপত্যকায় অবস্থিত। কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ফলে সৃষ্ট হ্রদের পার্শ্বেই উক্ত ব্লক দুটি অবস্থিত। খাসখালী ব্লকের পশ্চিম দক্ষিণ ও পূর্ব পার্শ্ব চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত।

খাসখালী রেঞ্জ, মেরুং রেঞ্জ, হাজাছড়ি রেঞ্জ, ফুলগাজী রেঞ্জ এবং ভেদভেদী বন সম্প্রাসারণ ও নার্সারী কেন্দ্রের সাথে বিভাগীয় সদরের সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। তিনকুনিয়া রেঞ্জ, কুতুবদিয়া রেঞ্জ, উল্টাছড়ি রেঞ্জ, ফুলগাজী রেঞ্জ (আংশিক), হাজাছড়ি রেঞ্জ (আংশিক) এর সাথে বিভাগীয় সদরের নদী পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে।

বর্তমানে ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগে ২৪,৫৭৮.৬২ একর সংরক্ষিত বনভূমি; ৩১,৬৭৯.৪২ একর ৪ ও ৪ ধারায় বিজ্ঞপ্তিতে বনভূমি; ৪৫৯.০০ একর বনায়নের জন্য জেলা প্রশাসন, খাগড়াছড়ি হতে বরাদ্দ প্রাপ্ত বনভূমি এবং ১.০৭,৫৮৪.৬৪ একর অশ্রেণীভূক্ত বনাঞ্চল আছে।


ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের রক্ষিত অশ্রেণীভুক্ত (খাস) বনভূমি হতে সংরক্ষিত বন ঘোষিত ভূমির বিবরণঃ-

জেলা

থানা

রেঞ্জ

মৌজা

সংরক্ষিত বনভূমির 

পরিমাণ (একর)

গেজেট নোটিফিকেশন নং

রাঙ্গামাটি পার্বত্য

জেলা

কাউখালী

খাসখালী

৯৫ নং  খাসখালী

৩,৫৬৭.০০

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন নং- পবম (শা-৩)-৫৪/৯৭/১৫৭, তারিখ- ০১/০৩/১৯ খ্রিঃ (বাংলাদেশ গেজেটে ২৯/০৭/২০০৪ খ্রিঃ তারিখে প্রকাশিত) মূলে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার খাসখালী ও বেতবুনিয়া মৌজায় মোট ৬,৩২৯.০০ একর এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন নং- পবম (শাঈ-৩) ১৫/৯৪/২৩৮, তারিখ-  ১২/০৫/১৯৯৮ খ্রিঃ (বাংলাদেশ গেজেটে ০৮/১০/১৯৯৮ খ্রিঃ তারিখে প্রকাশিত) মূলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার তারাবুনিয়া, ছোট মেরুং, বড় মেরুং, রেংকার্য্য, ছোট হাজাছড়া, হাজাছড়া মৌজায় মোট ১৮,২৪৯.৬২ একর ভূমি বন আইনের ২০ ধারায় সংরক্ষিত বন ঘোষণা করা হয়।

৯৫ নং (ক) বেতবুনিয়া

২,৭৬২.০০

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা মোট=

৬,৩২৯.০০

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা

দীঘিনালা

মেরুং

৩০ নং বড় মেরুং

৩,৯৯৯.৬২

৫৪ নং তারাবুনিয়া

৫০০.০০

৫৫ নং ছোট হাজাছড়া

১,৪০০.০০

হাজাছড়ি

২৮ নং রেংকার্য্য

৪,৬০০.০০

২৯ নং ছোট মেরুং

১,৭৫০.০০

৫৬ নং হাজাছড়ি

৬,০০০.০০

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা মোট=

১৮,২৪৯.৬২

সর্বমোট=

২৪,৫৭৮.৬২


এ পর্যন্ত অত্র বন বিভাগে রাজস্ব বাজেট ও বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় মোট ৪০,১৪৭.৫০ একর বাগান সৃজন করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অশ্রেণীভূক্ত ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বনীকরণ ও ঝুমিয়া পুনর্বাসন প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায়ে অত্র বন বিভাগের অধিক্ষেত্রে এ পর্যন্ত মোট ৪৬০টি ঝুমিয়া পরিবারের পুনর্বাসন করা হয়। কিন্ত বিগত সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে ৪৩৫টি ঝুমিয়া পরিবার পুনর্বাসিত এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।

অত্র বন বিভাগের প্রশাসনিক কার্যক্রম রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় অবস্থিত ০৬টি রেঞ্জ ও ০১টি বন সম্প্রসারণ ও নার্সারী কেন্দ্র এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় ০২টি রেঞ্জ ও ০১টি বন শূল্ক পরীক্ষণ ফাঁড়ির মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়ে থাকে। বিগত সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান পরিস্থির কারণে অত্র বন বিভাগের প্রশাসনিক ইউনিটগুলোর অধিকাংশ ঘরবাড়ী পরিত্যক্ত হয় এবং এগুলো বর্তমানে মেরামত ও পুনঃনির্মাণের অপেক্ষায় আছে। প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুন্নয়ন ব্যয় খাতের আওতায় ০৩ জন প্রথম শ্রেণীর ও ০৯ জন দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তাসহ ২২৯ জন কর্মকর্তা/কর্মচারীর মঞ্জুরীকৃত পদের সংস্থান রয়েছে।

অত্র বন বিভাগের আওতাধীন বনাঞ্চল হতে কাঠ, জ্বালানী, বাঁশ ও ছন ইত্যাদি বনজদ্রব্য আহরিত হয়। ১৯৬০-৬১ অর্থবছর হতে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত মোট ৩,০৮,৩১,০৭৮.১৫ ঘনফুট কাঠ, ৩,৯৭,২৯,৫২৩.৮৫ ঘনফুট জ্বালানী কাঠ এবং ৬,২৭,১৬,৩০২টি বাঁশ আহরিত হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগ সৃষ্টির উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য ব্যহত হয়েছে। বনায়ন কর্মসূচীর তেমন অগ্রগতি হয়নি। পুনর্বাসিত ঝুমিয়া পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। ক্রমবর্ধিষ্ণু জনগোষ্ঠির চাহিদার চাপে অধিকাংশ পাহাড় বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়ে। ভূমি হারিয়েছে উর্বরতা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পার্বত্য এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে এবং ঝুমিয়া পরিবারের উন্নয়নের লক্ষ্যে তথা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বনায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা অপরিহার্য।